(***** ২০২৩ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর সৌম্যেন্দু রায় স্যার মারা যান। ৫ই অক্টোবর, ২০২৩ স্যারের উদ্দ্যেশ্যে এই চিঠিটা লিখি। আজ স্যারের মৃত্যুবার্ষিকীতে সেই চিঠিটা স্যারকে আবার লিখছি। এই লেখার প্রচ্ছদের ছবিটা শ্রদ্ধেয় হিরণ মিত্র-এর আঁকা।)
প্রিয় রায় স্যার,
প্রচুর কথা- সিনেমা নিয়ে, জীবন নিয়ে, যা আপনার সাথে এতদিনে হয়েছে, আজ বরং সব ব্যক্তিগত থাকুক। কিছু কথা, যা আপনাকে আর কোনোদিনও বলা হবে না সেগুলোও ব্যক্তিগত থাকুক। কিছু সুখ, কিছু দুঃখ, যা আপনার সাথে ভাগ করে নিতাম, সেগুলোও আজ থেকে একান্ত ব্যক্তিগত কোনো জায়গায় সুরক্ষিত থেকে যাক। যে সুখ-দুঃখ আর আপনার সাথে কোনোদিন ভাগ করে নিতে পারবো না, সেগুলোও ব্যক্তিগতই থাকুক। আপনার সাথে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত, আপনার দেওয়া প্রতিটা শিক্ষা, উপদেশ সব আজ ব্যক্তিগত, গোপন কোনো অলিন্দে সযত্নে রেখে দিলাম।
আপনার শেষ যাত্রায় যেতে পারিনি কেন স্যার আপনি নিশ্চয় জানেন। হয়তো যেতে না পারাটা আমার শাস্তি ছিল।
কিন্তু সবাই বললেও স্যার আমি মানি না যে আপনি আর নেই। একদম ভুল কথা। আমি বিশ্বাস করি কিছু কিছু তারাদের মৃত্যু হয় না। রায় স্যারের কোনো মৃত্যু নেই।
মাথার উপরে ধ্রুবতারা হয়ে থাকুন স্যার। আর, জীবনে একটু এদিক ওদিক কোনো বেচাল দেখলে, একটু বেশি লাইট ইউজ করে ফেললে আগের মতই আমার কানটা ধরে টেনে দেবেন।
আপনার জীবনে ব্যক্তিগত তো কিছুই প্রায় ছিল না। সবটাই হয় ‘রূপকলা’ অথবা ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে বিলিয়ে দিয়েছেন। বাকি যা কিছু সেসব তো সিনেমার পর্দায় রেখে গেছেন। তবু, আপনার বিলিয়ে দেওয়া ‘আলোছায়া’র মধ্যে থেকে কিছু ‘আলো’, কিছু ‘ছায়া’ একান্ত নিজের বলে সযত্নে তুলে রেখেছি। এই ‘আলো’তে, এই ‘ছায়া’তে আর কাউকে ভাগ দিতে পারবো না স্যার। আজও বাইরে গেলে যখন পরিচয় পাই আমি ‘সৌম্যেন্দু রায়’-এর ছাত্র, মনটা ভীষণ ভালো হয়ে যায়। এভাবেই থাকতে চাই স্যার, আপনার ছাত্র হয়ে। ভালো থাকবেন।
ভালোবাসা সহ,
আপনার এক ছাত্র।